Important Link Dhaka Stock Exchange (DSE) DSE Market price Chittagong Stock Exchange (CSE) CSE Market Price DSE Trade ***************************** Share News 24 Amarstock Puji Bazar Share Bazar Stock Bangladesh Sharebarta24 Daily Share Bazar Sunbd24.com Orthosongbad Bankingnewsbd Businesshour24 ***************************** |
|
ভালো শেয়ার কেনার ১০ টিপস
শেয়ার ব্যবসা করতে চান? তাহলে শেয়ার কেনার আগে আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয়ের ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং দেশ-বিদেশের বাজারের অভিজ্ঞতার আলোকে শেয়ার ব্যবসায় আগ্রহীদের জন্য কিছু মৌলিক বিষয় তুলে ধরেছে। তবে সব সময় যে এসব বিষয় কার্যকর ফল দেবে এমন নাও হতে পারে। বিশেষ করে স্বল্প মেয়াদে কাঙ্খিত ফল পাওয়া মুশকিল। তবে বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে বিনিয়োগ করা হলে দীর্ঘ মেয়াদে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।১। শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত (P/E) দেখুন। এটা ২০ এর কম হওয়া ভালো। পিই রেশিও যত কম হয়, বিনিয়োগে ঝুঁকি তত কম। মূল্য-আয় অনুপাত হচ্ছে একটি কোম্পানির শেয়ার তার আয়ের কতগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে তার একটি পরিমাপ। কোনো কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় যদি হয় ৫ টাকা, আর বাজারে শেয়ারটির দাম থাকে ৪৫ টাকা, তাহলে মূল্য-আয় অনুপাত হবে ৯। এর অর্থ কোম্পানিটি যদি তার আয়ের পুরোটা লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করে দেয় তাহলে বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পেতে ৯ বছর সময় লাগবে। কিন্তু শেয়ারটির বাজার মূল্য যদি হতো ১০০ টাকা, তাহলে মূল্য-আয় অনুপাত বা পিই রেশিও দাঁড়াতো ২০। অর্থাৎ কোম্পানির আয়ের ধারা অপরিবর্তিত থাকলে বিনিয়োগ ফেরতে ২০ বছর সময় প্রয়োজন। ২। শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (NAV) দেখুন। এর সাথে বাজারমূল্যের একটা সামঞ্জস্য থাকা উচিত। যদিও কোম্পানির অবসায়ন (বিলুপ্তি) না হলে সম্পদ মূল্যে বিনিয়োগকারীর কার্যত কিছু যায় আসে না। কোম্পানির অবসায়ন হলেই কেবল শেয়ারহোল্ডাররা ওই সম্পদের কিছুটা ভাগ পেতে পারেন। এক্ষেত্রেও সম্পদ বিক্রির মূল্য থেকে আগে ব্যাংক ঋণ এবং অন্যান্য পাওনা পরিশোধ করা হয়। এরপর কিছু অবশিষ্ট থাকলে তা শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়। ৩। শেয়ার প্রতি আয় (EPS) দেখুন। এটা যত বেশি হবে ততই ভালো। ইপিএস বেশি হলে বেশি লভ্যাংশ দেওয়ার সুযোগ থাকে। ইপিএস কম হলে লভ্যাংশের সক্ষমতাও কম হয়। ৪। মোট শেয়ারের সংখ্যা দেখুন। আর দেখুন তার কতটুকু ফ্লোটিং। চাহিদা-যোগানের সূত্র অনুসারে শেয়ার সংখ্যা কম হলে তার মূল্য বাড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অন্যদিকে শেয়ার সংখ্যা বেশি হলে বাজারে তা অনেক বেশি সহজলভ্য হয়। এছাড়া নিয়মিত ভালো অঙ্কের লেনদেন হয় এমন শেয়ার কেনা ভালো। কারণ কোনো কারণে জরুরী ভিত্তিতে টাকার প্রয়োজন হলে সহজেই শেয়ার বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করা সম্ভব। কিন্তু নিয়মিত লেনদেন হয় না এমন শেয়ারে বিনিয়োগ করা হলে জরুরিভিত্তিতে বিনিয়োগ প্রত্যাহার সম্ভব নয়। ৫। অনুমোদিত মূলধন (authorized capital) আর পরিশোধিত মূলধন (paid-up capital) এর রেশিও দেখুন। এই দুই মূলধনের পরিমাণ কাছাকাছি থাকলে বোনাস ও রাইট শেয়ার ইস্যু করা বেশ কঠিন। এ ক্ষেত্রে কোম্পানিকে আগে অনুমোদিত মূলধন বাড়াতে হবে। বোনাস লভ্যাংশে যেসব বিনিয়োগকারীর বিশেষ ঝোঁক রয়েছে তাদের উচিত এসব বিষয় দেখা নেওয়া। ৬। ডিভিডেন্ড ঈল্ড : শেয়ারের বাজার মূল্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিহিত মূল্যের চেয়ে বেশি হতে পারে। তাই লভ্যাংশের হার প্রকৃত রিটার্ন নির্দেশ করে না। ডিভিডেন্ড ঈল্ডই শেয়ারের সঠিক রিটার্ন। বাজার মূল্যের ভিত্তিতে প্রাপ্য লভ্যাংশ বিনিয়োগের কত শতাংশ তা-ই হচ্ছে ডিভিডেন্ড ইল্ড। ঘোষিত লভ্যাংশকে ১০০ দিয়ে গুণ করে সংশ্লিষ্ট শেয়ারের বাজার মূল্য দিয়ে ভাগ করলে ডিভিডেন্ড ইল্ড পাওয়া যায়। এ ইল্ড যত বেশি হবে বিনিয়োগকারীর প্রাপ্তিও তত বাড়বে। ৭। গত ৩-৪ বছরের ট্র্যাক রেকর্ড দেখুন। কী পরিমাণ ডিভিডেন্ড দেয় তা দেখুন। বার্ষিক গড় মূল্য দেখুন। চেষ্টা করুন এই মূল্যের কাছাকাছি দামে শেয়ার কেনার। ৮। ডিএসইর সাইটে প্রকাশিত গত ৫-৬ মাসের খবর দেখুন। পত্র-পত্রিকায় দেশ-বিদেশের অর্থনীতি ও ব্যবসার সংবাদগুলো দেখুন। তাহলে সম্ভাবনাময় খাত ও কোম্পানি চিহ্নিত করা অনেক সহজ হবে। ৯। ডিএসই এখন ৪ মাস পর পর কোম্পানির আর্নিং রিপোর্ট দেয়। একটু মাথা খাটালেই বছর শেষে কী পরিমাণ লাভ হতে পারে তা জানা সম্ভব। ১০। আপনি যে কোম্পানির শেয়ার কিনবেন সে কোম্পানির গুড উইল ও তার পরিচালকদের সামাজিক ও রাজনৈতিক দিকটাও বিবেচনায় নিতে হবে। একটি কোম্পানি কতটুকু ভালো ব্যবসা করবে, ব্যবসার সম্প্রসারণের সম্ভাবনা কতটুকু তা নির্ভর করে এর উদ্যোক্তাদের দূরদর্শীতা, দক্ষতা ও আন্তরিকতার উপর। একইভাবে মুনাফার সবটুকু হিসাবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে কি-না, লভ্যাংশের ক্ষেত্র অতিমাত্রায় রক্ষণশীল হবে, না-কি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিশেষ বিবেচনায় নেওয়া হবে তাও নির্ভর করে তাদের উপর। মনে রাখতে হবে, বিক্রির সময় নয়, বরং কেনার সময়ই লাভের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ ভালো দামে শেয়ার কিনতে পালে ভালো লাভের সম্ভাবনা বেশি থাকবে। কেনার সময় দাম বেশি পড়ে গেলে লাভের সম্ভাবনা একটু হলেও কমে আসবে। এআর |
বিনিয়োগের ১০ নিয়ম
শেয়ারবাজার খুবই জটিল, স্পর্শকাতর ও টেকনিক্যাল জায়গা। এখানে সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম বা পদ্ধতি মুনাফার নিশ্চয়তা দেয় না। কারণ অনেক ধরনের ফ্যাক্টর কাজ করে এখানে। আর এসব ফ্যাক্টর নিয়মিত পরিবর্তনশীল। তাই এই বাজারে বিনিয়োগের সময় অনেক সতর্ক ও যত্নবান থাকতে হয়; নইলে বড় ধরনের লোকসানের ঝুঁকি থাকে। কিছু নিয়মকানুন অনুসরন করলে এখানে ভালো করার সুযোগ থাকে। লোকসানের আশংকা কম থাকে। বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ১০টি নিয়ম এখানে তুলে ধরা হল। তবে নিজ নিজ বাস্তবতা ও বিচার-বিশ্লেষণের আলোকে নিয়মগুলো অনুসরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াই ভালো। ০১. বিনিয়োগযোগ্য তহবিলকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করুন আপনার হাতে বিনিয়োগ করার মত যে অর্থ আছে, তাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করুন। প্র তিটি ভাগ ভিন্ন ভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করুন। ধরুন-আপনার হাতে ৩০ লাখ টাকা আছে। এটিকে আপনি তিনটি সমান ভাগে ভাগ করতে পারেন। এ থেকে ১০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রে, ১০ লাখ টাকা শেয়ারবাজারে এবং বাকী ১০ লাখ টাকা জমি বা অন্য কোনো সম্পদ কেনায় কাজে লাগাতে পারেন। এভাবে বিভিন্ন খাতে ভাগ করে বিনিয়োগ করা হলে ঝুঁকি কমে আসে। একটি খাতে কোনো কারণে মন্দা দেখা দিলে বা লোকসানে পড়লে অন্য খাতের মুনাফা দিয়ে তা পুষিয়ে নেওয়া যায়। তাই ভুলেও আপনার পুরো অর্থ শেয়ারবাজার বা একটি খাতে বিনিয়োগ করবেন না। ০২. সক্রিয় শেয়ারে বিনিয়োগ করুন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয়ে নজর রাখা ভাল। এর মধ্যে দেখতে হবে কোম্পানির মৌলভিত্তি। কোম্পানিটি কী পণ্য উৎপাদন করে, উৎপাদিত কোথায় বিক্রি করে, গত কয়েক বছরের বিক্রি, মুনাফা ও লভ্যাংশের রেকর্ড। এসবের পাশাপাশি একটি বিষয়কে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। দেখতে হবে আপনি যে শেয়ারটিতে বিনিয়োগ করার কথা ভাবছেন তা সক্রিয় শেয়ার কি-না। অর্থাৎ বাজারে প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ওই শেয়ারটির কেনা-বেচা হয় কি-না। কারণ আপনাকে বিনিয়োগ করার সময় ওই বিনিয়োগ সহজে প্রত্যাহার করার কথাও ভাবতে হবে। যে শেয়ার নিয়মিত পর্যাপ্ত সংখ্যায় কেনা-বেচা হয় না, সেটিতে বিনিয়োগ করা হলে অনেক সময় বিপদে পড়তে হয়। শেয়ার বিক্রির সময় ক্রেতা পাওয়া যায় না। অথবা অনেক কম দামে বিক্রির অফার দিতে হয়। এতে হয় বিনিয়োগ আটকে যায়, নয়তো লোকসান দিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হয়। ০৩. বিনিয়োগের আগে পরিকল্পনা জরুরী যে কোনো শেয়ার কেনার আগে একটি পরিকল্পনা থাকা ভালো। আপনি কত শতাংশ মুনাফা আশা করেন কিংবা কত শতাংশ লোকসান হলে আপনি ওই শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে আসবেন তা আগে থেকে ভেবে নেওয়া ভাল। ধরা যাক, আপনি একটি শেয়ারে ১০ শতাংশ মুনাফা করার কথা ভেবে বিনিয়োগ করেছেন। শেয়ারটির মূল্য উর্ধমুখী ধারায় থাকলে আপনি হয়ত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফার জন্য অপেক্ষা করতে পারেন। কিন্তু দাম বাড়ছে দেখে কখনো লোভে পড়ে যাবে না। গুজবে কান দেবেন না। আরও বাড়বে এমন আশায় বসে না থেকে শেয়ারটি বিক্রি করে দেওয়াই হবে সবচেয়ে ভাল কাজ। এ সময় বিক্রি না করলে মুনাফার পরিবর্তে উল্টো লোকসানে পড়তে হতে পারে। ০৪. অতিমাত্রায় লেনদেন নয় খুব বেশী লেনদেন করা ভাল বিষয় নয়। লেনদেন করতে হবে হিসেব করে, পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে। কোনো শেয়ার বিক্রি করার পর এর টাকা দিয়ে ওই দিনই শেয়ার কেনার জন্য অস্থির হয়ে উঠার কোনো মানে নেই। বরং একটু অপেক্ষা করে পরিকল্পনাটি সাজান। ভাল করে পর্যালোচনা করে দেখুন, কোনো শেয়ারের মূল্যস্তর বিনিয়োগ অনুকূল অবস্থায় আছে কি না। যৌক্তিক মূল্যে শেয়ার না কিনতে পারলে মুনাফা করার সুযোগ থাকে কম। ৫. নির্বাচিত শেয়ারে বিনিয়োগ করুন আমাদের বাজারে প্রায় পৌনে তিনশ কোম্পানি তালিকাভুক্ত আছে। এখান থেকে ৫-১০টি কোম্পানি বেছে নিয়ে সেগুলোতে বিনিয়োগ করা ভাল। খুব বেশী সংখ্যক কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা হলে আপনার পক্ষে সবগুলো শেয়ারের খোঁজখবর রাখা কঠিন হয়ে যেতে পারে। আর মনোযোগের অভাবে আপনি হয়তো কোনো শেয়ার থেকেই কাঙ্খিত মুনাফা নাও পেতে পারেন। এমনকি লোকসানে পড়ার আশংকাও থাকে যথেষ্ট। ০৬. শেয়ারটি সম্পর্কে জেনে নিন আগে যে শেয়ারে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেন, সেটি সম্পর্কে ভালভাবে জেনে নেওয়া উচিত। বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিতদের কথায় অন্ধভাবে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভাল। অনেক সময় শোনা যায়, ওই শেয়ারটির দাম কয়েকদিনের মধ্যে ২০ শতাংশ বেড়ে যাবে। তমুকটির দাম ৩০ শতাংশ কমে যাবে। এসব গুজবে কান না দেওয়াই ভাল। বরং এমন কোনো তথ্য কানে আসলে এর যৌক্তিকতা কী তা পর্যালোচনা করে দেখুন। কোম্পানির কোনো অপ্রকাশিত তথ্য আছে কী-না, সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায় কোনো পরিবর্তন ঘটছে কী-না, এক্সটার্নাল কোনো ফ্যাক্টর আছে কী-না সে বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করুন। ০৭. প্রতিদিনই মুনাফার স্বপ্ন নয় শেয়ারবাজারে কখনও কখনও কিছু সময় প্রতিদিনই আপনার মুনাফা হতে পারে। কিন্তু তাই বলে প্রতিদিনই মুনাফা হবে এমনটি ধরে নেওয়া উচিত নয়। এমন আশায় বিনিয়োগ করা হবে বোকামি। অতিমাত্রার আশাবাদের কারণে আপনার বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত হতে পারে ভুল। ০৮. মুনাফা প্রত্যাহার করতে শিখুন কোনো শেয়ারে মুনাফা হলে, আরও মুনাফার আশায় অপেক্ষা না করে শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া ভাল। এতে খাতাকলমে থাকা মুনাফা আপনার ঘরে (অ্যাকাউন্টে) আসবে। মনে রাখবেন, গরু গোয়ালে না থেকে কেতাবে থাকলে কোনো লাভ নেই। সামগ্রিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও মুনাফা প্রত্যাহার করার অভ্যাস করতে হবে। মুনাফার পুরো অর্থ পুনঃবিনিয়োগ না করে এর একটি অংশ প্রত্যাহার করে নিন। সেটি অন্য কোনো খাতে বিনিয়োগ করুন। লাভজনক খাত পাওয়া না গেলে অন্তত ব্যাংকে মেয়াদী আমানত হিসাবে জমা রাখুন। তাতে আপনার ঝুঁকি অনেক কমে আসবে। ০৯. মন্দ সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন শেয়ারবাজারে উত্থান-পতন নিয়মিত বিষয়। আপনি হয়ত চাঙ্গা বাজারে বিনিয়োগ করেছেন, কিন্তু মুনাফা নেওয়ার আগেই ওই বাজারের গতিপ্রকৃতি বদলে যেতে পারে। একইভাবে একটি শেয়ারের উর্ধমুখী ধারা দেখে আপনি হঠাৎ বিনিয়োগ করে বসেছেন, কিন্তু শেয়ার ম্যাচিউরড হওয়ার আগেই শেয়ারটির দাম কমে যেতে পারে। তাই এমন মন্দ সময়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন। ১০. গুজবের মধ্যে তথ্য খুঁজুন বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির ভাল-মন্দ নিয়ে নানা ধরনের গুজব ভেসে বেড়ায়। সেগুলোর কোনো কোনোটির মধ্যে সত্যতার কিছু ছাপ থাকলে থাকতেও পারে। কিন্তু অন্ধভাবে কোনো শোনা কথা কান দেবেন না। বড়জোর যেসব গুজব শোনা গেছে, সেগুলো সম্পর্ক অনুসন্ধান করে দেখুন কোনোটির সত্যতা আছে কী-না। (অর্থসূচক আয়োজিত বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০১৫ এর সমাপনী দিনে ‘পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের নানাদিক’ শীর্ষক সেমিনারে উপস্থাপন করা বক্তব্য থেকে নেওয়া) মেজর সৈয়দ গোলাম ওয়াদুদ (অবসরপ্রাপ্ত) |
একজন বিনিয়োগকারীর শেয়ার ব্যবসায় ব্যর্থতার ১১ কারণ
আসলে অনেক বিনিয়োগকারীর এই আক্ষেপ যে তারা শেয়ার কিনলেই দাম কমে যায়। তারা বুক ভরা হতাশা নিয়ে কথাগুলো বলেন। কিন্তু আসলে তারা কি করেন? শেয়ারের দাম কমে যাওয়ার ব্যাপারটি কি সবার ক্ষেত্রে ঘটে নাকি কারো কারো ক্ষেত্রে। আসলে যারা সঠিক দামে শেয়ার কিনতে পারেন না তাদেরই কেনার পর দাম কমে যায়!তাহলে শেয়ার ব্যবসায় সফলতা লাভের অন্তরায় কি? আসলে কিছু ভ্রান্ত ধারণাই সফলতার পেছনে পথ আগলে রাখে। কিছু বিষয় আজকে তুলে ধরব বিনিয়োগকারীরা এ বিষয়গুলো যদি মনে রাখনে তাহলে সফলতা লাভের পথে এগিয়ে যাবেন। সকল পরিস্থিতিতে একই কৌশলকে বেদবাক্য মনে করা! ‘শেয়ারের সংখ্যা কম হলে দর বৃদ্ধি পাবে, বেশি হওয়ার কারণে দাম বাড়বে না, এজিএম এর সময় এসেছে তাই দাম বাড়বে। পঁচা শেয়ার বা ব্যবসায়িক অবস্থা যত বেশি খারাপ হওয়ার খবর প্রকাশিত হবে শেয়ারের দর তত বেশি বৃদ্ধি পাবে, বিক্রী না করে ধরে রাখলেই লাভ পাওয়া যাবে’- এ ধরনের বহুবিধ ধারণার কোনো একটিকে সকল সময়ের সকল পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর হ্রাস বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান বা একমাত্র কারণ বা বিবেচ্য বিষয় মনে করে অনেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকেন। প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো একক নির্দিষ্ট কারণ নেই যার ফলে সব সময়ে সব পরিস্থিতিতে যে কোনো শেয়ারের দর তাৎক্ষণিকভাবে হ্রাস বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে থাকে। অবশ্য এ যুক্তির কিছু বিরল ব্যতিক্রমও রয়েছে। এ অবস্থায় কোনো এক বিশেষ সময়ে বিশেষ পরিস্থিতি পর্যালোচনাপূর্বক ট্রেন্ড বা ফান্ডামেন্টাল বিশ্লেষণের আলোকে শেয়ার কেনা বেচা করা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন। গড় করার ভ্রান্ত ধারণা গড় করার ভ্রান্ত ধারণা শেয়ার বাজারে বহুল প্রচলিত। আপনি গড় করার জন্য যে দামে একটি শেয়ার ক্রয় করছেন ঐ কোম্পানির শেয়ারের দর যদি পরবর্তীতে আরও পড়ে যায় তাহলে বেশি দামে ক্রয় করে গড় করার অর্থ কি আর্থিক ক্ষতির সম্মখীন হওয়া নয়? একটি বিশেষ সময়ে ঐ শেয়ারটির সর্বনিম্ন বাজার দর কত হওয়া উচিত তা বিশ্লেষণে যদি আপনি দক্ষ হন তাহলেই গড় করার জন্য বিশেষ দরে ঐ শেয়ারটি ক্রয় করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে গড় করার জন্য আপনি যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছেন, অন্য কোনো শেয়ারে ঐ পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে যদি আরও বেশি প্রাপ্তির সম্ভাবনা থাকে, তাহলে গড় করার ধারণা বাদ দিয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সম্ভাবনাময় শেয়ারটিতে বিনিয়োগ করাই উত্তম। এভাবে ঝুঁকির মাত্রাকেও কমানো যায়। অবশ্য সুচিন্তিত বিশ্লেষণ ভিত্তিক গড় করার কৌশলটি শেয়ার বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি কার্যকর ও ফলপ্রসূ কৌশল, বিশেষভাবে চাঙ্গা বাজারে ট্রেন্ড বিশ্লেষণভিত্তিক কেনা বেচার ক্ষেত্রে। তাৎক্ষণিকভাবে ভুল সংশোধন না করা ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের সেই অনাকাঙ্খিত এবং অস্বাভাবিক শেয়ারের দর বৃদ্ধির ঘটনা চিন্তা করুন। এক ব্যক্তি তার সারা জীবনের সঞ্চয় ২০ লক্ষ টাকা দিয়ে ২০১০ সালের জানুয়ারী মাসে শেয়ারবাজারে ঢুকেছিলেন এবং এর পরপরই শেয়ার বাজারে ধস নামে। পড়তি বাজারের শুরুতে লাখ তিনেক টাকা ক্ষতি স্বীকার করে নিয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে তিনি বের হয়ে আসতে পারতেন। কিন্তু আসেননি। ফলাফল তার একাউন্টে এখন আছে সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো। কিন্তু তিনি যদি ধ্বসের শুরুতেই তাৎক্ষণিক ভুল সংশোধন করে শেয়ার বিক্রি করে বেরিয়ে আসতেন তাহলে পরবর্তীতে তিনি ভালো শেয়ারে বিনিয়োগ করে তিন লাখ টাকার লোকসান পুষিয়ে নিতে পারতেন। ‘সব সময় কেনা বেচা হয় না এমন শেয়ার ক্রয় না করার ভ্রান্ত ধারনা’ সব সময় কেনা বেচা হয় না এমন শেয়ার না কেনাই ভালো এটা একটি বিজ্ঞজনোচিত পরামর্শ। তবে এ ধারণার ভুল ব্যাখ্যা করে মাত্র ২/১টি কোম্পানির শেয়ার কেনা বেচাতে সীমাবদ্ধ থাকা সমীচীন নয়। ঢাকা ষ্টক এক্সচেঞ্জে প্রতি ট্রেডিং দিবসেই নিয়মিতভাবে শতাধিক কোম্পানির শেয়ার কেনা বেচা হয়। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা কম থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম ষ্টক এক্সচেঞ্জে নিয়মিতভাবে লেনদেন হওয়া শেয়ারের সংখ্যাও নগণ্য নয়। তাই সর্বাধিক কেনা বেচা হয় এ ধরনের অতি সীমিত সংখ্যক শেয়ার কেনা বেচা করতে হবে এমন যুক্তির কোনো ভিত্তি নেই। একটি বিশেষ কোম্পানির কী পরিমাণ শেয়ার নিয়মিতভাবে বেচা-কেনা হয় তার ভিত্তিতে ঐ কোম্পানির কতটি শেয়ার ক্রয় করা সঙ্গত তাই এক্ষেত্রে মূল বিবেচ্য বিষয়। এ কৌশল অবলম্বন করে আপনি আপনার বিনিয়োগ বহুমুখীকরণের মাধ্যমে অপেক্ষাকৃত বেশি সংখ্যক সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র থেকে লাভ অর্জন করতে পারেন এবং এভাবে ঝুঁকিও হ্রাস করা সম্ভব। বেশি লেনদেন হয় এমন অতি অল্প সংখ্যক কোম্পানির বাহিরে অতি সস্তায় বেশ কিছু শেয়ার ক্রয় করার সুযোগ প্রায়ই সৃষ্টি হয়, যেখানে বিনিয়োগ করে অনেকে ঝুঁকিমুক্তভাবে অপেক্ষাকৃত বেশি মাত্রায় লাভবান হয়ে থাকেন। অবশ্য একথাও মনে রাখতে হবে যে, একই সঙ্গে প্রচুর সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করা ও ম্যানেজ করা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। সঠিক দর বিবেচনা না করে কোম্পানি ফান্ডামেন্টালকে একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হিসেবে গণ্য করা শেয়ার ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে যেমন নূন্যতম কোম্পানি ফান্ডামেন্টাল বিবেচনাতে নেয়া প্রয়োজন তেমনি ঝুঁকির মাত্রা কমাতে হলে কোম্পানি ফান্ডামেন্টালকে অবশ্যই যথাযথভাবে বিবেচনা করতে হবে। তবে শেয়ারটির বাজার দর অনেক বেশি কিনা, সঠিক দর কত হওয়া উচিত এ সকল বিষয় বিবেচনা না করেই নামী দামী কোম্পানির শেয়ার মাত্রাতিরিক্ত বেশি দরে ক্রয় করা অনেক ক্ষেত্রে ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, মূলধনী লাভ, লভ্যাংশ বা অন্যান্য প্রাপ্তির বিষয় বিশেষ পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা প্রয়োজন। প্রতিটি শেয়ার কেনা বেচা করার ক্ষেত্রেই সঠিক দর বিশ্লেষণের বিষয়টি যথাযথভাবে অবশ্যই বিবেচিত হতে হবে। ফেস ভ্যালু ও কম দাম এবং বেশি দামের ভ্রান্ত ধারণা: এক ব্যক্তি কয়েক লক্ষ টাকা পুঁজির সমুদয় অর্থ নির্দিষ্ট একটি শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন। ঐ কোম্পানিটির উপর এত বেশি আগ্রহ কেন এ প্রশ্নের জবাবে জানা যায়, তার দৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট শেয়ারটির দর কম। তিন চার হাজার টাকা মূল্যের শেয়ারও যেহেতু বাজারে বিক্রী হচ্ছে তাই ৫০ টাকা দরে একটি শেয়ার ক্রয় করা তার যুক্তিতে সস্তাই বটে। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন ধরনের শেয়ারসমূহকে এভাবে তুলনা করার কোন ভিত্তি নেই। বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা যায়: ফেস ভ্যালু শেয়ারের বাজার দর শেয়ার প্রতি আয় শেয়ার প্রতি সম্পদ লভ্যাংশ ১০০(একশত) টাকা ১০০০ টাকা ১৩০ টাকা ১০০০ টাকা ৯০ টাকা ১০০(একশত) টাকা ৪০০ টাকা ৭০ টাকা ৫৪০ টাকা ৪৫ টাকা ১০০(একশত) টাকা ৫০ টাকা ৩ টাকা ১৫ টাকা ৩ টাকা উপরের দৃষ্টান্ত থেকে এ বিষয়টি পরিষ্কার যে, উক্ত ১০০০, ৪০০ ও ৫০ টাকার শেয়ারগুলোকে একই পাল্লায় মাপা যায় না। বরং এক্ষেত্রে ফেস ভ্যালু বা সম্পদ বা আয়ের সঙ্গে বাজার দরের আনুপাতিক সম্পর্ক, সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি, বাজার দরের তুলনায় ভবিষ্যৎ প্রাপ্তি, ইত্যাদির তুলনামূলক পর্যালোচনা গুরুত্বপূর্ণ। বাস্তবে চিরস্থায়ী কম দাম এবং বেশি দাম বলতে কিছু নেই। ব্যবসায়িক সফলতা, ব্যর্থতা, ভবিষ্যৎ বিষয়ক সম্ভাবনা/হতাশা ইত্যাদি বিষয়ের আলোকেই বিশেষ পরিস্থিতি বিশেষভাবে বিবেচনার ভিত্তিতে শেয়ারের উচিত দর নির্ধারিত হয়। কোম্পানির ব্যবসয়িক অবস্থা বা লাভ-ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস বৃদ্ধির প্রতি সবসময় দৃষ্টি না রাখা দক্ষ শেয়ার ব্যবসায়িদের অনেকে নূন্যতম কোম্পানি ফান্ডামেন্টাল বিবেচনা ব্যতীত কোনো শেয়ার ক্রয় করেন না। বিজ্ঞ ব্যবসায়িগণ কোনো শেয়ারের ব্যবসায়িক ক্ষতির খবরে তাৎক্ষণিকভাবে শেয়ারটি বিক্রি করে দেন। অন্যদিকে টেকসই ও ক্রমবর্ধমান লাভের ইঙ্গিত পেয়ে সেই শেয়ার অপেক্ষাকৃত সস্তায় ক্রয় করে ঝুঁকিমুক্তভাবে প্রচুর লাভ অর্জন করেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ব্যবসায়িক মন্দাবস্থা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনাও বিবেচনা করুন। দর বৃদ্ধি সব সময়ের জন্য শুভ লক্ষণ নয় এক সময়ের নামী দামী ব্যবসা সফল কোম্পানিও বর্তমানে লোকসানের সম্মুখীন হতে পারে। কোনো একটি কোম্পানি দীর্ঘস্থায়ী মন্দা কবলিত হয়ে পড়তে পারে। অথচ বর্তমান লোকসানের খবর প্রকাশ হওয়ার পূর্বেই কিছু ব্যক্তি যাদের কাছে প্রচুর শেয়ার রয়েছে তারা সাময়িকভাবে কৃত্রিম চাহিদা সৃষ্টি করে, শেয়ারটির দর বাড়িয়ে তুলতে পারেন কিম্বা অন্য কোনো কারণে শেয়ারটির দর বৃদ্ধি পেতে পারে। যে বৃদ্ধি টেকসই হয় না এবং অনেক ব্যবসায়ী এ ধরনের শেয়ার বেশি দামে ক্রয় করে অনেক ক্ষেত্রে প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হন। বিজ্ঞ ব্যবসায়ীদের সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এ ধরণের শেয়ারের দর বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান করে বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শুধু একটি বিষয়ের ভিত্তিতে দুটি শেয়ারের তুলনা: একজন শেয়ার ব্যবসায়ীর প্রশ্ন, দুটি কোম্পানি একই পণ্য তৈরি করছে অথচ একটির দর ১১০ টাকা অন্যটির দর ২০ টাকা কেন? মনে করা যাক প্রথম কোম্পানিটি দীর্ঘ দিন যাবত ব্যবসা করছে এবং সন্তোষজনক লভ্যাংশ প্রদানের পরেও ঐ কোম্পানির শেয়ার প্রতি সম্পদ (পুঞ্জীভুত লাভসহ) ৯০ টাকা ও শেয়ার প্রতি আয়ের পরিমাণ ১১ টাকা। দ্বিতীয় কোম্পানিটির ক্ষেত্রে শেয়ার প্রতি সম্পদ ও আয়ের পরিমাণ যথাক্রমে ১৩ টাকা ও ১ টাকা। যদিও দ্বিতীয় কোম্পানিটির ব্যবসায়িক সম্ভাবনা উজ্জ্বল তথাপিও বর্তমান ব্যবসায়িক অবস্থা, সম্পদ প্রভৃতির প্রেক্ষাপটে দুটি কোম্পানির শেয়ার দরের ভিন্নতার যৌক্তিকতা সহজেই বোঝা যায়। এ ধরনের বহু কারণের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু একক বিষয়ের ভিত্তিতে শেয়ারের দর তুলনা করা ঠিক নয়। অথচ প্রথম কোম্পানিটির শেয়ারের দর ১১০ টাকা দেখে দ্বিতীয় এবং নবাগত কোম্পানিটির শেয়ারের দর সহসা ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে অনুমান করে ঐ শেয়ার উচ্চ মূল্যে ক্রয় করে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ঘটনাও শেয়ার বাজারে দেখা যায়। লভ্যাংশের ভিত্তিতে শেয়ার ক্রয় করা: লভ্যাংশই শেয়ার ক্রয়ের জন্য একমাত্র বিবেচ্য বিষয় হতে পারে না। লভ্যাংশ প্রদানের ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা, ব্যবসায়িক অবস্থা, ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পরিবর্তন এ ধরনের বহুবিধ বিষয়ও এক্ষেত্রে বিবেচনা করতে হবে। সবার জন্য একই কৌশল সঠিক মনে করা: শেয়ার ব্যবসাকে একটি যুদ্ধ ক্ষেত্রের সাথে তুলনা করা যায়। যুদ্ধে জয়লাভের জন্য যেমন সেনাবাহিনীকে বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে হয় এবং বেশি সংখ্যক সৈন্য অপেক্ষা অল্প সংখ্যক সৈন্যের ক্ষেত্রে ভিন্নতর কৌশল অবলম্বন করতে হয়, শেয়ার ব্যবসাতেও তেমন বিভিন্ন কৌশলে পোর্টফোলিও সাজাতে হয়। যার অপেক্ষাকৃত বেশি বিনিয়োগযোগ্য মূলধন রয়েছে, যার পক্ষে বিনিয়োগযোগ্য মূলধনের কিছু অংশ থেকে লাভ প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষাকৃত বেশি দিন অপেক্ষা করা সম্ভব, যার পক্ষে কিছু বেশি দামে শেয়ার ক্রয়ের পরেও উক্ত শেয়ারের দর তাৎপর্যপূর্ণ মাত্রায় হ্রাস পাওয়ার পর সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে বেশি পরিমাণ শেয়ার ক্রয় করে গড় ক্রয় মূল্য হ্রাস করা সম্ভব, শেয়ার দর ওঠানামার ছন্দ অনুসরণ করে ক্রয় করা শেয়ার বিক্রীযোগ্য হওয়ার পূর্বেই, স্বল্প সময়ে, পূর্বের মজুদ থেকে শেয়ার বিক্রী করে লাভ অর্জন করা সম্ভব, তার কৌশল এবং অতি অল্প পুঁজির, একজন ব্যবসায়ীর কৌশল এক হতে পারে না- এ বিষয়টি অনুধাবনে করতে হবে। এস. এম. হোসেন, অতিথি লেখক, শেয়ারবার্তা ২৪ ডটকম |
শেয়ার ব্যবসা করতে চান? তাহলে যা জানা দরকার
অনেকেই শেয়ার ব্যবসা করতে চান। কিন্তু কোনোধরনের ধারণা না থাকায় আর শুরু করা হয় না। শেয়ার ব্যবসা করতে চাইলে একজন ব্যক্তিকে কী জানতে হবে এবং কীভাবে ব্যবসা শুরু করতে হবে তার একটি প্রাথমিক ধারণা অর্থসূচকের পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো- * প্রথমে বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। ব্রোকারেজ হাউজে একক বা যৌথ একাউন্ট খোলা যায়। * বয়স ১৮ বছর হতে হয় * নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হয় বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো হলো- * জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, নিজের ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, নমিনির ১ কপি ছবি, ব্যাংক স্ট্যাটমেন্ট জয়েন্ট অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রেও উল্লিখিত কাগজ ও ছবি জমা দিতে হবে। * বিও অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ব্রোকারেজ হাউজভেদে ৫০০-২,০০০ টাকা পর্যন্ত চার্জ দিতে হয়। শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে : শুরুতে শেয়ার বেচা-কেনার ক্ষেত্রে যেসকল বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয়- *প্রথমে দেখতে হবে কোম্পনিটির মৌলভিত্তি কেমন অথবা কোম্পানিটি কোন ক্যাটারগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানিগুলোর জন্য ৪টি ক্যাটাগরি রয়েছে। ক্যাটাগরিগুলো হলো- A, B, N ও Z ক্যাটাগরি A: যে সকল কোম্পানি প্রত্যেক বছর নিয়মিতভাবে এজিএম করে ও ১০% এর বেশি লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। ক্যাটাগরি B: যে সকল কোম্পানি প্রত্যেক বছর নিয়মিতভাবে এজিএম করে ও ১০% এর কম লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। ক্যাটাগরি Z: যেসব কোম্পানি পর পর দুই বছর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয় না, কোম্পানীকে Z ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই কোম্পানীর শেয়ার ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্রোকারেজ হাউজগুলো মার্জিন একাউন্টের বিপরীতে কোন লোন সুবিধা প্রদান করে না। এই কোম্পানীর শেয়ারগুলো ক্রয়ের ১৫ কার্যদিবস পর বিক্রি করতে হয়। ক্যাটাগরি N: বাজারের অন্তর্ভুক্ত হওয়া নতুন কোম্পানিগুলোর এজিএম (বার্ষিক সাধারণ সভা) হওয়ার আগ পর্যন্ত নতুন কোম্পানিগুলো N ক্যাটাগরিতে অবস্থান করে। কোম্পানির ইপিএস (আর্নিং পার শেয়ার) কত? প্রত্যেক কোম্পানি বছরে ৪টি কোয়ার্টারে ইপিএস দিয়ে থাকে। ইপিএস হলো শেয়ার প্রতি আয়। কোনো কোম্পানি একটি নির্দিষ্ট সময়ে যে পরিমাণ লাভ করে সেই লভ্যাংশকে মার্কেটের মোট শেয়ারে ভাগ করে দিলে যা আসে তাই হলো ইপিএস। কোম্পানির শেয়ারের পিই (প্রফিট আর্নি রেশিও) কত? যে কোম্পানির পিই যত বেশি সে কোম্পানি তত বেশি অতি মূল্যায়িত। বাংলাদেশের শেয়ার মার্কেটের কোম্পানিগুলোর পিই ২৫ এর বেশি হলে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। লেনদেন : সরকারি ছুটি ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত লেনদেন হয়ে থাকে। ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে সরাসরি এবং ফোনের মাধ্যমে শেয়ার কেনা-বেচা করা যায়। ক্রয়কৃত শেয়ার ৪র্থ কর্মদিবসে বিক্রি করা যায়। শেয়ার বিক্রির ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যে সাধারণত অ্যাকাউন্ট পে চেক প্রদান করা হয়। অ্যাকাউন্টের টাকার মেয়াদ পাওয়ার জন্য কমপক্ষে ৩ দিন পূর্বে রিকুইজিশন দিতে হয়। আইপিও শেয়ার বিক্রির জন্য প্রদত্ত আইপিও এর ওয়্যারেন্ট পত্র ব্রোকারেজ হাউজে জমা দিতে হয়। এআর আনিসুর রহমান |